একদিনেই ঘুরে আসুন গুলিয়াখালী সি বিচে
সমুদ্র পাড়ে সবুজ গালিচা বিছানো এক বিস্ময়কর জায়গা গুলিয়াখালী সি বিচ। চারপাশে বিস্তৃত জলরাশি। অন্যদিকে কেওড়া বন। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট ছোট খালের চারদিকে বেড়িয়ে আছে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল। এই কেওড়া বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে।
এই বন আসলে ম্যানগ্রোভ বন হলেও এর পরিবেশ অনেকটা সোয়াম্প ফরেস্টের মতো। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচা বিছানো। সমুদ্র পাড়ের এই মনোরোম সৌন্দর্য বাংলাদেশের আর কোথাও দেখা যায় না। প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে এটি অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে একদম আলাদা। এর একদিকে দিগন্ত জোড়া জলরাশি ও অন্যদিকে কেওড়া বন। এ কারণেই গুলিয়াখালী সি বিচে হাজার হাজার পর্যটক গিয়ে ভিড় জমায়।
সবুজ গালিচা বিছানো ছোট ছোট গাছের মাঝখান দিয়ে এঁকে-বেঁকে গেছে সরু নালা। এই নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে। শীতকালে অবশ্য সমুদ্র পাড়ের খালগুলোতে পানি কম থাকে। ওই সময় হেঁটেই পৌঁছানো যায় বিচে। তবে বর্ষার সমুদ্র থাকে উত্তাল। এ কারণে খালের পানিও বেড়ে যায়, যেতে হয় নৌকা নিয়ে।
একদিনেই ঘুরে আসা যায় গুলিয়াখালী থেকে। দেশের যে কোনো স্থান থেকে প্রথমে যেতে হবে সীতাকুণ্ড শহরে। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঢাকামুখী রাস্তার বাঁ পাশ দিয়ে একটু হেঁটে নিচে নামলেই পাওয়া যাবে সিএনজি। ভাড়া জনপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, আর রিজার্ভ যেতে চাইলে ১০০-১৫০ টাকা। বেড়িবাঁধ এসে সিএনজি নামিয়ে দেবে।
মূল সড়ক থেকে বেড়িবাঁধ নেমে কিছুদূর মাটির রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে সমুদ্র পাড়ের দিকে। কিছুদূর এগিয়ে গেলেই হাতের ডানদিকে পড়বে কয়েকটি ছোটো টং দোকান ও হোটেল। সামনে আরও কিছুদুর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বিস্তৃত জলরাশি আর কেওড়া বন। এখানেই অনেকগুলো নৌকা দাঁড়িয়ে থাকে। ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলো নিয়েই সোয়াম্প ফরেস্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। সেখানেই চোখে পড়বে ছোট ছোট সবুজ ঘাসের গালিচা বিছানো গুলিয়াখালী সি বিচ।
যদিও গুলিয়াখালী সৈকতটি এখনো সরকারিভাবে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেনি। তবুও প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে সেখানে। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ না থাকায় রাতে সৈকতটি মোটেও নিরাপদ নয়। দিনে দিনেই ঘুরে আসতে হবে সেখান থেকে।
No comments