পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ - পাবনার অন্যতম দর্শনীয় স্থান
পাবনার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। ছুটির দিনে এবং যে কোনো উৎসবে ভ্রমণপ্রিয় মানুষ এখানে ঘুরতে যান। এখানে গেলে আপনি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশাপাশি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লালন শাহ সেতুও দেখতে পাবেন। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালন শাহ সেতু আর পদ্মার দু’পাড়ের সবুজে ঘেরা মনোরম সৌন্দর্য্য এক নতুন মাত্রা আনে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘিরে ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট। ব্রিজের নিচেও গড়ে উঠেছে বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান। নদীর পারে আছে নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা। লালন শাহ সেতু নির্মাণের আগে হার্ডিঞ্জ ব্রিজেরে একপাশে মানুষের হেঁটে পারাপারের ব্যবস্থা ছিল। এখন সেই পথটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাকশীর দিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজে ওঠার সিঁড়ির কাছে ব্রিজটি সম্পর্কে তথ্য বিবরণী দেয়া আছে।
জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মাঝ পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ৪ মার্চ ১৯১৫ সালে এটি উদ্বোধন করেন। তার নামনুসারে ব্রিজটির নামকরণ করা হয় ‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজ’।
অবিভক্ত ভারতের কোলকাতার সাথে আসাম এবং ইস্টার্ন বেঙ্গলের যোগাযোগ সহজীকরণের লক্ষ্যে ১২৬ বছর আগে ১৮৮৯ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তক পদ্মা নদীর উপর রেল সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পেশ করা হয়। দীর্ঘ ২০ বছর আলোচনার পর ১৯০৮ সালে প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবে সিঙ্গেল লাইন বিশিষ্ট সেতু নির্মাণের কথা থাকলেও চুড়ান্ত নকশায় দ্বৈত লাইনের সংস্থান রাখা হয় এবং নির্মাণ করা হয়।
ব্রীটিশ সরকারের নির্মিত পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এর খ্যাতি বিশাল পরিচয় বহন করে। বর্তমান জগতে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের চেয়েও লম্বা অনেক সেতু আছে। কিন্তু কিছু কিছু কারণে এ ব্রীজটি অপ্রতিদ্বন্দীভাবে বিখ্যাত। প্রথম কারণ হচ্ছে এ ব্রীজের ভিত গভীরতম পানির সর্বনিম্ন সীমা থেকে ১৬০ ফুট বা ১৯২ এমএসএল মাটির নিচে। এর মধ্যে ১৫ নম্বর স্তম্ভের কুয়া স্থাপিত হয়েছে পানি নিম্নসীমা থেকে ১৫৯ দশমিক ৬০ ফুট নিচে এবং সর্বোচ্চ সীমা থেকে ১৯০ দশমিক ৬০ ফুট অর্থ্যাৎ সমুদ্রের গড় উচ্চতা থেকে ১৪০ ফুট নীচে। সে সময় পৃথীবিতে এ ধরনের ভিত্তির মধ্যেই এটাই ছিল গভিরতম।
ব্রীজটি অপূর্ব সুন্দর ও আর্কষণীয় হওয়াতে ব্রিটিশ ইন চীফ ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট উইলিয়াম গেইলস’কে সাফল্যের পুরস্কারস্বরূপ স্যার উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
যেভাবে যাবেন: বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে রেল অথবা সড়ক পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন অথবা বাস টার্মিনালে নেমে রিকশা/টেম্পুযোগে যাওয়া যায়। তবে ব্রীজটি পাকশী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন।
No comments