শেরপুর; সংগ্রামের ইতিহাসে ভরা জেলা - Hosted By আতিক বাবলা
ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল শেরপুর জেলা। পূর্বে এটি ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮৪ সালে এটি জেলায় উন্নীত হয়। ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত হয় শেরপুর জেলা। বিভাগীয় শহর ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ১৯৮ কিলোমিটার।
শেরপুর অঞ্চলটি অনেক আগে কামরূপা রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। মুঘল শাসনামলে এই এলাকা ‘দশকাহনিয়া বাজু’ নামে পরিচিত ছিল। তখন শেরপুরে যেতে ব্রহ্মপুত্র নদ খেয়া পাড়ি দিতে হত। খেয়া পারাপারের জন্য দশকাহন কড়ি নির্ধারিত ছিল বলে এই অঞ্চলটি দশকাহনিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৭০০ শতকের প্রথম দিকে ভাওয়ালের গাজী, ঈসা খানের বংশধর থেকে দশকাহনিয়া এলাকাটি সম্পূর্ণ দখল করে নেয়। পরবর্তীতে দশকাহনিয়া পরগনা গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজীর নামানুসারে শেরপুর নামকরণ করা হয়।
১৮০০-১৯০০ শতাব্দী এই দীর্ঘ একশত বৎসর শেরপুরবাসীর একটানা সংগ্রামের ইতিহাস। এ সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছিল প্রজাদের উপর জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে। আর পরোক্ষভাবে অনেক ক্ষেত্রে ইংরেজ শাসনের উচ্ছেদ এর জন্য। জমিদারদের অত্যাচারের বিরূদ্ধে প্রজারা প্রায় সময়ই আন্দোলনে লিপ্ত থাকত। আন্দোলনগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য ছিল বক্সারী বিদ্রোহ, ফকির আন্দোলন, প্রজা আন্দোলন, আদিস্থান আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন ইত্যাদি।
শেরপুর জেলায় বেশ কিছু পুরাকীর্তি রয়েছে। আর এসব পুরাকীর্তি শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে একত্রিত করা হয়েছে। শেরপুর জেলার বিভিন্ন পুরাকীর্তির মধ্যে রয়েছে জমিদার গোবিন্দ চন্দ্র চৌধুরীর আমলে নির্মিত সিন্দুক, জমিদার আমলে নির্মিত সাজঘর, জমিদারের পাঠ কেদারা, দূরালাপনি সহ আরও অনেক কিছু।
এছাড়া প্রাচীন কিছু স্থাপনাও রয়েছে। যেমন: আনুমানিক ৬০০ বৎসর পূর্বে নির্মিত ঘাগড়া খান বাড়ি মসজিদ। আরেকটি প্রাচীন নিদর্শন ‘মাই সাহেবা মসজিদ’, যেটি আনুমানিক ২৫০ বৎসর পূর্বে নির্মাণ করা। এই অঞ্চলের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য গড়জরিপা বার দুয়ারী মসজিদ। আরো কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হল:- পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়ি, রং মহল, গোপী নাথ ও অন্ন পূর্ন্না মন্দির, জিকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লোকনাথ মন্দির ও রঘুনাথ জিওর মন্দির। শেরপুরের এসব ঐতিহ্য ভ্রমণ পিয়াসুদের জন্য দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেশ উল্লেখযোগ্য।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.