সুন্দরবনের কোলঘেঁষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পিরোজপুর জেলা। বৈচিত্র্যে ভরা এই পিরোজপুর জেলার একদিকে মিঠা পানি, আর অপরদিকে লবণাক্ত পানির অবস্থান। ১৯৮৪ সালে পিরোজপুর জেলায় রূপান্তরিত হয়। জেলাটি বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। কাউখালী, নাজিরপুর, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), পিরোজপুর সদর, ভাণ্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া ইন্দুরকানী; এই ৭টি উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর জেলা গঠিত।
এ জেলার নামকরণের ব্যাপারে খুব একটা মতভেদ দেখা যায় না। সুলতানি আমলের মুসলিম শাসক ফিরোজ শাহের নামানুসারেই এ অঞ্চল পরিচিতি পায় ‘ফিরোজপুর’ নামে। পরবর্তীতে ‘ফিরোজপুর’ নামটি পরিবর্তিত হয়ে পিরোজপুর নামে রুপান্তরিত হয়। এভাবেই নামটি এসেছে বলে গবেষকরা মনে করেন। অপর এক মতে, মোগল সম্রাট শাহসূজার পুত্র ফিরোজ শাহের নামে ‘ফিরোজপুর’ এবং পরে ‘পিরোজপুর’ নামটি এসেছে।
পিরোজপুর জেলার সংস্কৃতি ও ভাষা বেশ খানিকটা প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। জেলার কোনো আঞ্চলিক ভাষা নেই। তবে খুলনা ও বরিশাল এই দুই জেলার মাঝখানে অবস্থিত হবার কারণে এই জেলা গুলোর ভাষার প্রভাব রয়েছে এ জেলায়।
পিরোজপুর জেলায় বেশ কিছু পুরাকীর্তি স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনা ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের বেশ আকৃষ্ট করে। এ জেলায় প্রায় ৩৫০ বছর আগে উৎপত্তি হয়েছিল জমিদার বংশের আর সেই সুবাদেই এখানে প্রতিষ্ঠা হয় রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ির। এই জমিদার বাড়িতে রয়েছে একটি কালি মন্দির যেখানে অবস্থান করছে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শিবলিঙ্গ। এছাড়াও কিছু পুরাকীর্তি স্থাপনা রয়েছে। সেগুলো হল: পিরোজপুরের প্রাচীন কেন্দ্রীয় মসজিদ, মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ, সাপলেজা কুঠিরবাড়ি।
পুরাকীর্তি স্থাপনা ছাড়াও এই পিরোজপুর জেলায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সেগুলো হল: হুলারহাট নদী বন্দর, সোনাখালী জমিদার বাড়ি, রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি, পারেড় হাট জমিদার বাড়ি, স্বরুপকাঠীর পেয়ারা বাগান, কবি আহসান হাবিব এর বাড়ি, ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক, রিভার ভিউ ইকো পার্ক, হরিণপালা ইকোপার্ক, আটঘর আমড়া বাগান, কুড়িয়ানা অনুকুল ঠাকুরের আশ্রম, বলেশ্বর ঘাট শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, উপজেলা পরিষদের ফুলের বাগান, সারেংকাঠী পিকনিক স্পট।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.