বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল বরগুনা। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের পাড়ে অবস্থিত এই জেলা। উপকূলীয় অঞ্চল হলেও এক সময় সবকিছুতেই প্রচুর সমৃদ্ধ ছিল এই এলাকা। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে পরাস্ত হয়েছে সবকিছু। ২০০৭ সালে দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সিডর ঝরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল এই বরগুনা জেলা।
বরগুনা জেলা মূলত কৃষি নির্ভর এলাকা। তবে উপকূলীয় এ অঞ্চলে বেশ কিছু চিত্তাকর্ষক স্থানও রয়েছে। তারমধ্যে লালদিয়া সমুদ্রসৈকত অন্যতম। বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় অবস্থিত বলেশ্বর নদী ও বিষখালি নদীর মোহনায় এবং লালদিয়া বনের পাশে অবস্থিত এই সমুদ্রসৈকত। পর্যটন আর্কষনের জন্য কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের আদলে গড়ে সাজানো হচ্ছে এই সৈকত।
সমুদ্রসৈকতটি বেশ ছোট। তবে ছোট হলেও সৌন্দযের্র কমতি নেই। এখানে বিভিন্ন রকমের পাখির কলকাকলি এবং সমুদ্রের গর্জন শুনে ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা বিমোহিত হন। এখানে সাগরের নোনা জল গিয়ে আছড়ে পড়ছে বালুকাবেলায়। সমুদ্রের ওপর দিয়ে উড়ে যায় গাংচিল। আর হাজারো লাল কাকড়ার দল ছুটে বেড়ায় বেলাভূমিতে। সে এক নান্দনিক দৃশ্য।
এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত; দুটোই দেখা যায়। এক পাশে সমুদ্র আর অন্য পাশে বন, মাঝে সৈকত; এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকৃতিতে বিরল। লালদিয়া সমুদ্রসৈকত পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ঝাউবন। হরিণবাড়িয়া বনে নির্মিত ৯৫০ মিটার দীর্ঘ ফুটট্রেল (পায়ে হাঁটার কাঠের ব্রিজ) সম্প্রসারিত করে লালদিয়া সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত নেয়া হয়েছে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌ, উভয় পথেই পাথরঘাটা যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে সাকুরা, বনফুল, সুরভী, বরিশাল এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন ঢাকা-পাথরঘাটা রুটে চলাচল করে। নদী পথেও যাওয়া যায়। প্রতিদিন কয়েকটি লঞ্চ ঢাকার সদরঘাট থেকে পাথরঘাটার কাকচিড়া লঞ্চঘাট হয়ে বরগুনা যায়। কাকচিড়া নেমে মাহেন্দ্র যোগে পাথরঘাটায় যাওয়া যায়। পাথরঘাটা থেকে ট্রলার কিংবা নৌকা ভাড়া করে যাওয়া যায় লালদিয়া বন ও সমুদ্র সৈকতে।
এছাড়া সুন্দরবনের হরিণঘাটা দিয়ে হেটেও যাওয়া যায় লালদিয়া বন ও সমুদ্র সৈকতে। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা হতে পারে।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.