এখন সময় রসালো ফল লটকনের। পুরো নরসিংদী জুড়ে চলছে লটকনের মহা উৎসব। সাথে দেখে নিতে পারেন প্রাচীন প্রত্নতত্ত্ব উয়ারী ও বটেশ্বর।
উয়ারী ও বটেশ্বর মূলত দুটি আলাদা গ্রাম। তবে গ্রাম দুটি পাশাপাশি থাকায় এবং সেখানে প্রাচীন বাংলার বৌদ্ধধর্মের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া যাওয়ার কারণে, তারা একসাথে উয়ারী-বটেশ্বর নামেই পরিচিত। ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত নরসিংদী জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তরে বেলাব ও শিবপুর উপজেলার পাশে গ্রাম দুটির দেখা মেলে।
ওয়ারী বটেশ্বর দেখার ফাকে ফাকেই হাটা পথে যা চোখে পড়বে তা হলো লটকন। চারদিকে খালি লটকন গাছ। আর হলুদ রঙের ফল। থোকায় থোকায় লটকন ঝুলছে গাছের শরীরজুড়ে। এমনকি গাছের গোড়ার দিকে ঝুলে থাকা লটকন মিশেছে মাটির সঙ্গেও। বলা যায় লটকনে পরিপূর্ণ বাগানের প্রায় সব গাছ। এমন বাগান আছে নরসিংদীর শিবপুর ও রায়পুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
সবচেয়ে বেশি লটকনের গাছ পাবেন নরসিংদীর শিবপুরে। শিবপুর উপজেলার ছোটাবন্দ গ্রামে পা দিয়েই দেখা মিলবে অসংখ্য লটকন গাছের। ইচ্ছেমতো লটকন খেতে পারবেন গাছ থেকে পেড়ে। তবে অবশ্যই বাগানের মালিকের সাথে কথা বলে নেবেন। তিনিই আপনাকে দেখিয়ে দেবেন কোন গাছের লটকন বেশি মিষ্টি আর কোন গাছেরটা টক!
জ্যৈষ্ঠ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত লটকনের পূর্ণ মৌসুম। তবে ভাদ্রের মাঝামাঝি পর্যন্তও কিছু লটকন পাওয়া যায়। এখানকার লটকন বিক্রির হাট বসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরার মরজাল বাজার বাসস্ট্যান্ড,শিবপুরের কামারটেক বাজার বাসস্ট্যান্ড,চৈতন্যবাজার ও গাবতলী বাজার। চাষিরা খুব সকালে লটকন ছিঁড়ে ছোট ঝুড়িতে ভরে নিয়ে আসেন বাজারে। সকালেই বাজার জমে। পাইকার আসেন ঢাকা,সিলেটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে। অনেক পাইকার বাগান থেকেও কিনে নেন।
দেশের অন্যান্য আরও অনেক এলাকাতে লটকন হয়। তবে স্বাদের সেরা লটকন পাবেন এখানেই। বাগান ভ্রমণের সাথে সাথে কিনে নিয়ে যেতে পারেন প্রিয়জনদের জন্যেও। নরসিংদীর গ্রাম গুলোও খব সুন্দর কিন্তু চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ।
নরসিংদী যেভাবে যাবেন
ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে বামে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে একটু এগুলেই নরসিংদী। ঢাকা থেকে নরসিংদীর দূরত্ব মাত্র ৫৪ কিলোমিটার। গুলিস্তান,সায়েদাবাদ ও আব্দুল্লাহপুর থেকে নরসিংদীর বাস পাওয়া যায়। বিভিন্ন পরিবহন ৫ মিনিট পর পর নরসিংদী যাচ্ছে। যেতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। ট্রেনেও নরসিংদী যেতে পারবেন। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে নরসিংদী যেতে ট্রেনে সময় লাগে ১ ঘণ্টার মতো।
যেখানে থাকবেন
নরসিংদী সকালে এসে ঘুরেফিরে রাতেই ঢাকা ফেরা সম্ভব। শহরে থাকা-খাওয়ার বেশ কয়েকটি ভালো হোটেল আছে,আছে নরসিংদী শহরে ডাকবাংলোও, রয়েছে আবাসিক হোটেলও।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.