অনেক পুরোনো ঐতিহ্যের শহর পাবনা। আর প্রাচীন এই শহরে রয়েছে প্রচুর পুরাকীর্তি স্থাপনা। তেমনি একটি স্থাপনা হান্ডিয়াল জগন্নাথ মন্দির। পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় অবস্থিত এই প্রাচীন মন্দিরটি। এটি চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল গ্রামে অবস্থিত বলে স্থানীয় লোকজন একে হান্ডিয়াল মন্দিরও বলে থাকে।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার শেষ সীমানার ইউনিয়নটির নাম হান্ডিয়াল। ১৮৪৫ খৃষ্টাব্দে ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানীর থানা ছিলো এটি। তখন অবশ্য চাটমোহর থানা ছিলনা। কোম্পানী শাসন আমলে হান্ডিয়াল ছিলো উন্নত বন্দর। এখানে তখন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের আধিক্য ছিলো। ফলে জনপদটিতে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন ঘটেছিলো। এখানকার হিন্দু ছিল প্রচুর ধনী। তাদের সময়েরই জগন্নাথ মন্দিরটি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদগণের অনুমান, জগন্নাথ মন্দিরটি ১৫ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত হয়েছিলো। তবে মন্দিরের গায়ে যে শিলালিপি পাওয়া যায় সে অনুযায়ী ১৫৯০ সালে ভবানীপ্রসাদ নামে একজন ব্যক্তি মন্দিরটি সংস্কারের কাজ করেছিলেন।
হান্ডিয়াল মন্দিরটি এক দরজা বিশিষ্ট একটি ছোট মন্দির। মঠটির উপরের দিক দিয়ে সিঁড়ি ক্রমশই ছোট হয়ে গেছে। মন্দিরের সামনের যে দেয়াল তাতে ট্যারাকোটার নকশা করা রয়েছে। আর সম্পূর্ণ মঠটি একটি শক্ত ভিত্তির উপর তৈরি করা।
সম্পূর্ণ মন্দিরটি চারদিকে দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ করা। তবে এর পাশেই রয়েছে নতুন আরো দুটি মন্দির। এই মন্দিরটিতে একটি মন্ডপ এবং ছোট একটি রথ রয়েছে। বর্তমানে জগন্নাথ মন্দিরটি স্থানীয় মানুষ পূজা অর্চনার কাজে ব্যবহার করে থাকে।
যেভাবে যাবেন:
চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে, তাড়াশ থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং বড়াল ব্রীজ স্টেশন থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটিতে যাওয়া খুবই সহজ। প্রথমে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাসে চলে আসা যাবে পাবনা। সেখান থেকে চাটমোহর। তবে ট্রেনে আসলে বেশি সুবিধা। কারণ চাটমোহরেই ট্রেন থামে। সেখান থেকে অটোতে বা সিএনজিতে যাওয়া যাবে হান্ডিয়াল মন্দিরে।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.