বন বিভাগের খাতায় এর নাম ‘টেংরাগিরি বনাঞ্চল’। তবে স্থানীয় নাম ‘ফাতরার বন’। আবার অনেকের কাছে পাথরঘাটার বন নামেও পরিচিত এটি। সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বন এটি।
বরগুনার তালতলী থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত পর্যন্ত চোখজুড়ানো এই বনের আয়তন ১৩ হাজার ৬৪৪ একর। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা টেংরাগিরি অতীতে সুন্দরবনের অংশ ছিল। টেংরাগিরি বনাঞ্চল নামকরণ হয় ১৯৬৭ সালে। ১৯২৭ সালের বন আইনের জরিপ অনুযায়ী, ১৯৬০ সালের ১২ জুলাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এটিকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করে। বন ঘেঁষে প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রায় তিন কিলোমিটার প্রস্থের সোনাকাটা সৈকত নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আরেক লীলাভূমি।
প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই বন বিভিন্ন গাছপালায় সমৃদ্ধ। কেওড়া, গরাণ, গেওয়া, শেওড়া প্রভৃতি শ্বাসমূলীয় গাছ হচ্ছে এই বনের প্রধান গাছ। এছাড়াও এই বনে দেখা মেলে জাম, ধুন্দল, সুন্দরী, বাইন, করমচা, বলই কেওয়া, তাল, বনকাঁঠাল, রেইনট্রি, হেতাল, তাম্বুলকাটা ও গরান গাছের।
ফাতরার বন বন্যপ্রাণীরও অভয়ারণ্য। এখানে দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, বানর, বন বিড়াল, বন্য শুকর ইত্যাদি বন্যপ্রাণী। বন মোরগ সহ হরেক প্রজাতির পাখিরও দেখা মেলে ফাতরার বনে। আরও আছে গুঁইসাপ সহ বিভিন্ন প্রকার সাপ।
সুন্দরবনের খুব কাছে হলেও এ বনে এখন পর্যন্ত বাঘের দেখা মেলেনি। তবে এখানে অত্যন্ত কম পরিমাণে মেছো বাঘ আছে। বর্তমানে হরিণ, বানর, অজগর সাপ ইত্যাদি প্রাণী খুব কম দেখা যায়। আর লোকালয়ে সাধারণত কাকড়া, গুইসাপ, ব্যাঙ, চিড়িং মাছ প্রভৃতি এবং গভীর বনে শিয়াল, বন্য শূকর, বানর ইত্যাদির দেখা মেলে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটার বাস পাবেন। ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চে করেও যেতে পাড়েন বরিশাল অথবা পটুয়াখালী হয়ে।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.