পদ্মা নদীর পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের শহর রাজশাহী। বলা চলে এই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে রাজশাহী অঞ্চল। আর এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনা হচ্ছে বড়কুঠি। বিশাল এই ভবনটিও পদ্মার তীর ঘেঁষেই রয়েছে।
এই ইমারতের নির্মাণকাল সঠিক বলা না গেলেও বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের বিচারে এর নির্মাণকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বলে ধারণা করা হয়। প্রথম দিকে এটি ওলন্দাজ বা ডাচদের ব্যবসাকেন্দ্র ছিল। তবে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ডাচরা ভারত থেকে তাদের সকল কর্মকাণ্ড গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলে ১৮১৪ সালে ইংরেজদের সাথে তারা একটি চুক্তি করে বড়কুঠিসহ ভারতের সকল ব্যবসা কেন্দ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে হস্তান্তর করে দেয়। এরপর ইংরেজরা বড়কুঠির দায়িত্ব গ্রহণ করে ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত এটিকে তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে।
ইষ্টক নির্মিত এবং সমতল ছাদ বিশিষ্ট এই ভবনটি আঠার শতকের প্রথম দিকে ওলন্দাজ রেশম ব্যবসায়ীদের নির্মাণ করা এক উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। দুইতলা এই ভবনটিতে মোট ১২টি কক্ষ রয়েছে। দোতলায় একটি সভাকক্ষসহ রয়েছে আরো ৬টি কক্ষ। কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিশালাকার সভাকক্ষের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে বারান্দা এবং কক্ষের পশ্চিমদিকে দুটি এবং পূর্ব দিকে এক সারিতে তিনটি কক্ষ রয়েছে।
ডাচ ব্যবসায়িরা জরুরী সময়ে ভবন বা ইমারতটি দুর্গ হিসেবে ব্যবহার করত। এজন্য ইমারতের ছাদে এবং নিচে বেশকটি কামান শত্রুদের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রাখতো সবসময়। ১৮৩৩ সালে এটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে আসলে কামানগুলো অন্য যায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এখনো তিনটি পুরাতন কামান রাজশাহী পুলিশ লাইন এ সংরক্ষিত আছে।
পরবর্তীকালে ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই বড়কুঠি ভবনটি এর প্রথম প্রশাসনিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.