বালাপুর জমিদার বাড়ি ইতিহাস আর ঐতিহ্যে সৌন্দর্যমণ্ডিত। এই জমিদার বাড়িটি গুরুত্বপূর্ণ এক প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনও। নরসিংদীর সদর উপজেলার পাইকারচর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরে বালাপুর গ্রামে এই জমিদারটি অবস্থিত। ঐতিহ্যপ্রেমী এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষ শত শত বছর পরও বালাপুর জমিদারবাড়ির বিশালতা এবং কারুকাজ দেখে মুগ্ধ হন।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, বালাপুর জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা জমিদার বাবু নবীন চন্দ্র সাহা। তবে কবে নাগাদ এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয় তা জানা যায়নি। প্রায় ৩২০ বিঘা জমির উপর এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করা হয়।
এখানে একটি একতলা ভবন, একটি দোতালা ভবন ও একটি তিনতলা ভবন তৈরি করা হয়েছিল; যা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। তিনতলা ভবনটি একশত এক (১০১) কক্ষ বিশিষ্ট ভবন। ৯২ শতক জমি জুড়ে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটিতে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা ঘাট রয়েছে। এছাড়াও জমিদার বাড়িটিতে একটি মন্দির ও দুর্গাপূজার মণ্ডপ রয়েছে।
এই জমিদার বাড়ির জমিদাররা ছিলেন সংস্কৃতিমান। সন্ধ্যা নামলেই জমিদার বাড়িতে প্রতিদিন ডাক ঢোলের বাজনা বাজা শুরু হত। বিভিন্ন ধরনের নাটক, পালা গানসহ আরো অনেক ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ হলে তারা তাদের জমিজমা মন্দিরের নামে উইল করে দিয়ে এই দেশ ছেড়ে ভারতের কলকাতায় চলে যান। জমিদার কালীবাবু ভারতে চলে যাওয়ার সময় আগে থেকে তাদের জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের এই বিশাল সম্পত্তি ও জমিদারবাড়ির দেখাশোনার জন্য নির্দেশ এবং দায়িত্ব দিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে জমিদার কালীমোহন সাহা (কালীবাবু) এবং তাদের বংশধররা বাংলাদেশে আর ফিরে না আসায় জমিদার কালীবাবু যাদের জমিদারবাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন তারা নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে এই বিপুল সম্পত্তি ভোগ দখল করতে থাকেন।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকার গুলিস্তান সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে নরসিংদীগামী মেঘালয় বাস কাউন্টার আছে। মেঘালয় বাসে করে নরসিংদীর মাধবদী যেতে হবে। মাধবদী বাস স্ট্যান্ড নেমে রিকশায় করে মাধবদী গরুরহাট সিএনজি স্টেশন, তারপর গরুরহাট সিএনজি স্টেশন থেকে বালাপুরের সিএনজিতে উঠে নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নামতে হবে। সেখান থেকে ২-৩ মিনিট হাঁটলেই পেয়ে যাবেন ঐতিহ্যবাহী বালাপুর জমিদার বাড়ি।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.