বজরা শাহী মসজিদ; মোগল আমলের অসাধারণ স্থাপত্য - Hosted By ভ্রমণ বন্ধু
নোয়াখালী জেলা থেকে ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) উত্তরে ‘বজরা শাহী মসজিদ’ মোগল আমলের অসাধারণ স্থাপত্য। প্রায় তিনশ’ বছর আগে মোগল জমিদার আমান উল্লাহ খান এই মসজিদ নির্মাণ করেন।
মসজিদটি জেলার মাইজদী প্রধান শহর হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা নামক স্থানে প্রধান সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত। এটি মাইজদীর চারপাশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির একটি। ১৯৯৮ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বজরা শাহী মসজিদের ঐতিহ্য রক্ষা এবং দুর্লভ নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য কাজ করছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুগল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের রাজত্বকালে (১৭৪১-৪২ খ্রিস্টাব্দে) মসজিদটি আমান উল্লাহ নির্মাণ করেন। ১৯১১ থেকে ১৯২৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বজরা জমিদার খান বাহাদুর আলী আহমদ ও খান বাহাদুর মুজির উদ্দিন আহমদ মসজিদটি ব্যাপকভাবে মেরামত করেছিলেন এবং সিরামিকের মোজাইক দিয়ে সজ্জিত করেছিলেন।
আমান উল্লাহ তার বাড়ির সামনে ৩০ একর জমির উপর উঁচু পাড় যুক্ত একটি বিশাল দীঘি খনন করেন। এ দিঘীর পশ্চিম পাড়ে মনোরম পরিবেশে আকর্ষণীয় তোরণ বিশিষ্ট প্রায় ১১৬ ফুট দৈর্ঘ্য, ৭৪ ফুট প্রস্থ এবং প্রায় ২০ ফুট উঁচু তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এ ঐতিহাসিক মসজিদ নির্মাণ করেন।
মসজিদটি মজবুত করার জন্য মাটির প্রায় ২০ ফুট নিচ থেকে ভীত তৈরি করা হয়। সুদৃশ্য মার্বেল পাথর দ্বারা গম্বুজগুলো সুশোভিত করা হয়। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি ধনুকাকৃতি দরজা। মসজিদের প্রবেশ পথের উপর রয়েছে কয়েকটি গম্বুজ। কিবলা দেয়ালে তিনটি কারুকার্য খচিত মিহরাব আছে।
মসজিদের অভ্যন্তরীণ দুটি কক্ষ আছে, যা বহুখাঁজবিশিষ্ট আড়াআড়ি খিলান দ্বারা তিন ভাগে বিভক্ত। ছাদের উপর তিনটি কন্দাকৃতির গম্বুজ আছে, যা অষ্টকোণাকার। এগুলির শীর্ষ পদ্ম ও কলস চূড়া দ্বারা সজ্জিত।
যেভাবে যাবেন:
মাইজদী শহর থেকে বজরা শাহী মসজিদের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। বাস অথবা ট্রেনে করে নোয়াখালীর মাইজদী গিয়ে সোনাইমুড়ীগামী যেকোনো লোকাল বাস, সিএনজি অথবা অটোরিক্সায় বজরা হাসপাতালের সামনে নেমে ২০০ গজ এগিয়ে গেলেই বজরা শাহী মসজিদ। এছাড়া বাসে করে বজরা বাস স্ট্যান্ড থেকে রিক্সা অথবা পায়ে হেঁটে এই মসজিদে যাওয়া যায়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.