পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় গড়ে তোলা হয়েছে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্ক। পাহাড় ও সমতলের প্রায় ৫২০ একর এলাকাজুড়ে এই পার্কের অবস্থান। অতিথি পাখির অভয়ারণ্য এবং পর্যটন পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই পার্ক গড়ে তোলা হয়। ২০১০ সালের ৭ আগস্ট ব্যতিক্রমী এ পক্ষিশালার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। আর ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন।
এই পার্কটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির নিরাপদ আবাসস্থল। দেশের বিরল এবং বিপন্নপ্রায় প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হয় এখানে। এই পার্কে বাবুই, দোয়েল, শ্যামা, শালিক, ঈগল, শকুন, বুলবুলি, পেঁচা, হলদে পাখি, টুনটুনি, টিয়া, ঘুঘু, মাছরাঙা, সাদা বকের মতো বিলুপ্তপ্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হয়েছে।
দেশি প্রজাতির পাখির পাশাপাশি এই পক্ষিশালায় আছে আফ্রিকার পলিক্যান, সোয়ান, রিং ন্যাক, ইলেকট্রাস প্যারট, ম্যাকাওসহ বিভিন্ন বিদেশি পাখি। প্রকৃতিপ্রেমীদের মন জুড়াতে একেবারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকোপার্ক।
পার্কে ক্যাবলকার সংযোজন করার পর থেকে চট্টগ্রামের পর্যটন সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে গিয়েছে। পার্কের উপরে যেমন দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ, নিচে দৃষ্টিনন্দন লেক আর সবুজ অরণ্য। ঠিক এই দুয়ের মাঝখানে ভূমি থেকে প্রায় ২০০ ফুট উচ্চতায় বসে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়। বাতাসের ওপর ভেসে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এই পার্কে।
এই পার্কে ভেষজ ও অন্যান্য প্রায় ৭১ হাজার নানা প্রজাতির গাছ ও ৩০ হাজার সৌন্দর্যবর্ধক গাছ রোপণ করা হয়েছে। পার্কের চারপাশে এক ধরনের বিশেষ নেট দিয়ে পুরো ৫২০ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রয়েছে রেস্টহাউস, ঝুলন্ত সেতু, আধুনিক রেস্তোরাঁ, লেক, হেলানো বেঞ্চ, ওয়াচ টাওয়ার এবং শিশুদের সময় কাটানোর বিনোদনের ব্যবস্থা।
এছাড়াও রয়েছে হরিণ বিচরণক্ষেত্র ও কুমির প্রজনন ক্ষেত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণিজগৎ সম্পর্কে গবেষণায় সহায়তার জন্য রয়েছে গবেষণা কেন্দ্র।
যেভাবে যাবেন:
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা বন বিটের হোসনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় কাপ্তাই সড়কের পাশ ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্ক। চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কপথে বাসে চেপে এক ঘণ্টার মধ্যে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্কে পৌঁছে যাবেন।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.