মধ্য যুগের বিখ্যাত একজন ইসলাম প্রচারক শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালী। তৎকালীন গৌড়ে তিনি ইসলাম প্রচার করেন। বর্তমানে এটি রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার অধীনে পড়েছে।
সুলতান শাহ সুজার রাজত্বকালে তিনি দিল্লী প্রদেশের করোনিয়ার নামক স্থান থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে নানা স্থান ভ্রমণ করেন। ভ্রমণ পাগল এই ধর্ম প্রচারক ঘুরতে ঘুরতে এই অঞ্চলে এসে পড়ে এবং শাহ সুজা তাকে আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানান। পরবর্তীতে তিনি গৌড়ের উপকণ্ঠ বর্তমান শীবগঞ্জ উপজেলায় স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন। দীর্ঘদিন এখানে ইসলাম প্রচার করে তিনি। ১০৭৫ হিজরি (১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দে) মতান্তরে ১০৮০ হিজরিতে (১৬৬৯ খ্রিষ্টাব্দে) মৃত্যুবরণ করলে এখানেই সমাহিত করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী তোহাখানা কমপ্লেক্স এর অভ্যন্তরে শাহ নেয়ামতউল্লাহ (রঃ) এর তিন গম্বুজ মসজিদের উত্তরে শাহ নেয়ামত উল্লাহ (রঃ) এর মাজার অবস্থিত।
শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধিকে মুঘল যুগের সর্বপ্রথম সমাধি স্থাপত্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শাহ সুজা কর্তৃক নির্মিত তাহাখানার উত্তর পাশেই আছে তিন গম্বুজ মসজিদ। আর মসজিদের উত্তর পাশে শাহ নেয়ামত উল্লাহর মাজার। এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই ইমারতটি উঁচু ভিটের উপর অবস্থিত।
সমাধি ভবন এর প্রত্যেক দিকে ৪৯ ফুট দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং মধ্য প্রকোষ্ঠটি সারে ২১ ফুট বর্গ। এর স্থাপত্যটির প্রত্যেক দিকের দেয়ালেই ৩টি করে মোট ১২টি দরজা রয়েছে। যার ফলে একে বারদুয়ারী নামেও ডাকা হয়। এছাড়া মুল কক্ষের চারদিকে গিরে রয়েছে টানা ভর্টেড বারান্দা। মূল মাজার কক্ষের চতুর্দিকে একটি দরজা বিদ্যমান। সব দরজাগুলো খিলানযুক্ত মূল কক্ষের ওয়াল ভোল্ট গম্বুজ এর ভার বহন করে। চারপাশে বিভিন্ন রকম গাছগাছালি এবং ফুল ও পাতাবাহার গাছ দ্বারা সুশোভিত রয়েছে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সরাসরি কানসাটের গাড়ি আছে। ন্যাশনাল ট্রাভেলস, দেশ ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস, তুহিন এলিট, একতা ট্রান্সপোর্ট এর এসি নন এসি বাসে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে পারেন। সেখান থেকে কানাট থেকে অটো রিজার্ভ করে খুব সহজেই এই মাজারে যাওয়া যায়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.