প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ও দুটি পাতা, একটি কুড়ির অঞ্চল সিলেট। এই জেলায় যেনো প্রকৃতি নিজ হাঁতে তার সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। সৌন্দর্যে ভরা এই জেলায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তার মধ্যে সিলেট জেলার লোভাছড়া একটি।
লোভাছড়া সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নে অবস্থিত এক মনোহরিণী স্থান। মূলত এটির নাম লোভাছড়া চা বাগান’। আর এই চা বাগানের সূত্র ধরেই পুরো একটা বিশাল এলাকার নাম হয়েছে লোভাছড়া। আর রয়েছে লোভাছড়া স্বচ্ছ পানির নদী। এটি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা খাসিয়া–জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত।
চারিদিকের সবুজে ঘেরা পাহাড় আর তার মাঝে এই লোভাছড়ার স্বচ্ছ পানি এই স্থানকে এনে দিয়েছে এক ভিন্ন মাত্রার পরিবেশ। এখানে পাহাড়, নদী ও আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
লোভাছড়া নদীর পাশেই ব্রিটিশ আমলে প্রায় ১৮৩৯ একর জমির উপর ইংরেজ মালিকানায় গড়ে ওঠে লোভাছড়া চা-বাগান। এখানে আসলে সকাল দিকে লোভাছড়া চা বাগানে খরগোশ, হরিণ ও বন মোরগ দেখা যায়। তাছাড়া লোভাছড়া নদী থেকে পাথর উত্তলণের দৃশ্যও চোখে পড়ার মতো।
এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি দেখে মনে হবে এটি বুঝি রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। সড়ক পথে আসার পথে পাওয়া যায় বৃটিশ আমলে নির্মিত এই ঝুলন্ত সেতু, স্থানীয়ভাবে যা ‘লটকনির পুল’ নামে পরিচিত। আকর্ষণীয় এই সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে লোভাছড়ার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
লোভাছড়ায় মোঘল সাম্রাজ্যের অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। চোখাটিলা নামক একটি পাহাড়ের পাদদেশে একটি ঝর্ণার পাশে রয়েছে প্রাচীনকালের দুটি পাথর। এ পাথরে বসে রাজা-রাণীরা লোভাছড়ার সৌন্দর্য নিবিড়ভাবে অবলোকন করতেন। এখানে আরো দেখতে পাবেন প্রাকৃতিক লেক ও ঝর্ণা, মীরাপিং শাহ’র মাজার, মোগল রাজা-রানির পুরাকীর্তি, প্রাচীন দীঘি, পাথর কোয়ারি ও বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন ও প্লেন; তিনভাবেই সিলেট যাওয়া যায়। সিলেট জেলা শহর থেকে প্রথমে কানাইঘাট উপজেলা যেতে হবে। সেখান থেকে নদী ও সড়ক দুই পথেই লোভাছড়া যাওয়া যায়। তবে নদী পথে যাওয়া বেশি সুবিধাজনক।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.