পাহাড়ি অঞ্চল চট্টগ্রাম। এই চট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এসব স্থানগুলোর ভেতরে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন পাহাড়তলী ইউনিয়নের পাহাড়তলী গ্রামের ঠিক মাঝখানে একটি অনুচ্চ টিলার উপর অবস্থিত মহামুনি বৌদ্ধ বিহার।
বিহারটির প্রতিষ্ঠাকাল নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে বেশ মতবিরোধ রয়েছে। কারও মতে, ১৮১৩ সালে পুণ্যাত্মা ভিক্ষু চাইংগা ঠাকুর স্বগ্রামবাসীর সামগ্রিক সহায়তায় এ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করেন।
কিন্তু ড: রামচন্দ্র বড়ুয়ার মতে, মহামুনি মূর্তি ও মন্দির ১৮০৫ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছে “১২৬৭ মগাব্দের ১০০ বছর পূর্বে (১৮০৫ খ্রিঃ) মহামুনি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে” (চট্টগ্রামের মগের ইতিহাস প্রাগুক্ত, পৃ, ১৬)। তবে প্রতিষ্ঠাকাল নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও এটা নিশ্চিত যে, উনবিংশ শতকের প্রথম দুদশকের মধ্যেই এ বিহার ও মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই বিহারটি ২০০ বছরের ঐতিহাসিক প্রাচীন নিদর্শন। ‘চাইঙ্গা ঠাকুর’ নামের এক বৌদ্ধ ধর্মগুরু এই বিহারে ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে মতান্তরে ১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দে মহামানব গৌতম বুদ্ধের মূর্তি স্থাপন করেন। এজন্যই গৌতম বুদ্ধের নামে এ বিহারের নামকরণ হয়েছিল মহামুনি মন্দির। পরে এই মন্দিরটির কারণে মহামুনি গ্রাম ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে।
মং সার্কেল রাজা ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে মহামুনি মন্দির চত্বরে মেলার প্রবর্তন করেন, যা চৈত্র মাসের শেষ দিন থেকে শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই মেলাটি মহামুনি মেলা নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। একটা সময় ছিল যখন মহামুনি মেলা এত জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল যে অবিভক্ত বাংলায় পশ্চিমবঙ্গ থেকেও এখানে জনসমাগম ঘটেছে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে করে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে হবে। তারপর চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাই সড়কে বাসে করে রাউজান পাহাড়তলী নেমে সিএনজি অথবা রিক্সা নিয়ে দক্ষিণে মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে যাওয়া যায়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.