বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বাশঁখালী উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক ইকোপার্ক “বাঁশখালী ইকোপার্ক”। প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত উঁচু-নিচু পাহাড়, লেকের স্বচ্ছ পানি, বনাঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত তটরেখা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই ইকোপার্কটি।
চট্টগ্রাম জেলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে বামেরছড়া ও ডানেরছড়া এলাকা নিয়ে ২০০৩ সালে ১০০০ হেক্টর বনভূমির উপর গড়ে উঠে বাঁশখালী ইকোপার্ক। বাংলাদেশ সরকার বন্যপ্রাণী ও বনজসম্পদ রক্ষার্থে ১৯৮৬ সালে ৭ হাজার ৭৬৪ হেক্টর বনভূমি নিয়ে ‘চুনতি অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে বামেরছড়া ও ডানেরছড়া প্রকল্প দুইটিও চুনতি অভয়ারণ্যের অর্ন্তগত করা হয়। এই অভয়ারণ্যে ছোট বড় অনেক পাহাড়, খাল ও ছড়া রয়েছে।
১৯৯৩ সালে এলজিইডি প্রকৌশল বিভাগ কৃষি জমিতে সেচ প্রকল্পের জন্য পাহাড়ের ঢালুতে বাঁধ তৈরি করে ডানের ও বামেরছড়ায় প্রায় ৮০ হেক্টর নিম্নাঞ্চলের ধানি জমি চাষ উপযোগী করে তোলেন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার এই বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা, ইকো ট্যুরিজম ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্মাণ শুরু হয় বাঁশখালী ইকোপার্ক। চট্টগ্রামের বিনোদন প্রিয় মানুষের কথা চিন্তা করে ২০০৩ সালে এই বাঁশখালি ইকো পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯৭ সালের উদ্ভিদ জরিপ মতে এখানে ৩১০ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে ১৮ প্রজাতির দীর্ঘ বৃক্ষ, ১২ প্রজাতির মাঝারি বৃক্ষ, ১৬ প্রজাতির বেতসহ অসংখ্য অর্কিড, ইপিফাইট ও ঘাস জাতীয় গাছ। এই এলাকায় গর্জন, গুটগুটিয়া, বৈলাম, সিভিট, চম্পাফুল এবং বিবিধ লতাগুল্ম সমৃদ্ধ চিরসবুজ বনাঞ্চল রয়েছে। এছাড়া পার্ক এলাকার ৬৭৪ হেক্টর বনভূমিতে মনোমুগ্ধকর বাগান তৈরি করা হয়েছে।
এই ইকোপার্কে বিচরণরত হাজার হাজার বন্য প্রাণী ও বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সম্পর্কে পর্যটকরা যেন খুব সহজেই জানতে পারেন সেজন্য এখানে রয়েছে একটি তথ্য ও শিক্ষাকেন্দ্র।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে করে সেখানে পৌঁছেতে হবে। তারপর চট্টগ্রাম জেলা শহর থেকে লোকাল পরিবহণে খুব সহজেই যেতে পারবেন এই বাঁশখালী ইকো পার্কে।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.