খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় সবুজ পাহাড় আর বুনো জঙ্গলের মাঝে অবস্থিত নয়নাভিরাম এক ঝর্ণা, যার নাম “তৈদুছড়া ঝর্ণা”। ত্রিপুরা ভাষায় তৈদু মানে হল পানির দরজা এবং ছড়া মানে ঝর্ণা।
তৈদুছড়া ঝর্ণা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু। পাহাড়ের গায়ে অগণিত পাথরের ধাপ রয়েছে, আর এই ধাপগুলো বেয়ে জল গড়িয়ে নিচে পরে। এই প্রাকৃতিক বৈচিত্রতাই তৈদুছড়া ঝর্ণাকে ভিন্ন করেছে অন্য সব ঝর্ণা থেকে। খাগড়াছড়িতে যেসকল দর্শনীয় স্থান রয়েছে তৈদুছড়া তার মধ্যে অন্যতম।
জঙ্গেলর ভেতর দিয়ে আঁকা বাঁকা পাহাড়ের ভাঁজ ঘেঁষে বয়ে চলে তৈদুছড়া ঝর্ণার পানি। শীতল-স্বচ্ছ পানির কলকল করে ছুটে চলার শব্দে মুখোর হয় চারপাশ। ৩০০ ফুট উচু থেকে গড়িয়ে পড়া পানি এসে পরে একদম পাথুরে ভূমিতে। আর সব ঝর্ণার মত এর পানি সরাসরি উপর থেকে নিচে পড়ে না।
পাহাড়ের গায়ে যে সিড়ির মত তৈরি হয়েছে সেই পাথুরে ধাপগুলো অতিক্রম করে নিচে এসে পড়ে তৈদুছড়া ঝর্ণার পানি। এই তৈদুছড়া ঝর্ণার ডানপাশ দিয়ে পাহাড়ের উপরে থাংঝাং ঝর্ণা নামে আরেকটি ঝর্ণা রয়েছে। থাংঝাং ঝর্ণার পানি থেকে একটা ঝিরি তৈরি হয়েছে, মূলত এই ঝিরির পানি থেকেই তৈদুছড়া ঝর্ণার সৃষ্টি হয়েছে।
যেভাবে যাবেন:
খাগড়াছড়ি থেকে তৈদুছড়া দুই ভাবে যাওয়া যায়। একটি দীঘিনালা হয়ে এবং অন্যটি সীমানা পাড়া দিয়ে। সীমানা পাড়া দিয়ে গেলে সময় অনেক বেঁচে যাবে। কারণ ট্র্যাকিং অনেক কম করতে হবে।প্রথমে ঢাকা থেকে যেকোনো পরিবহণে খাগড়াছড়ি পৌছাতে হবে। তারপর যদি সীমানা পাড়া হয়ে যেতে চান তবে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা মোড় থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে নয় মাইল নামক স্থানে নামতে হবে। এরপর দীঘিনালা গামী যে কোন বাসে করে অথবা সিএনজি নিয়ে নয় মাইল যেতে হবে। সেখান থেকে ৩/৪ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে সীমানা পাড়া যেতে হবে। সীমানা পাড়া থেকে গাইড ঠিক করে সেই গাইড নিয়ে তৈদুছড়ার পথে হাঁটতে হবে। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট হাঁটলে সামনে পড়বে তৈদুছড়া ঝর্ণা
আর যদি দীঘিনালা হয়ে যান তবে বাসে করে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা মোড় থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালা বাস স্টপেজে যেতে হবে। সেখান থেকে দীঘিনালা বাজার গিয়ে গাইড ঠিক করতে হবে। তারপর জামতলি নামক জায়গা থেকে ট্র্যাকিং শুরু করতে হবে। ঝিরিপথ, উঁচু নিচু পাহাড় এসব পার করে প্রায় ৩ ঘণ্টা হাটার পর পাবেন তৈদুছড়া ঝর্ণা।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.