টাঙ্গাইল জেলা – প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন ও জমিদার বাড়িতে ভরপুর - Hosted By S. faisal
টাঙ্গাইল জেলা ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।জেলাটি প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন ও জমিদার বাড়িতে ভরপুর। রাজধানীর খুব কাছে এবং এই জেলার চারদিকে উত্তরে জামালপুর জেলা, দক্ষিণে ঢাকা জেলা ও মানিকগঞ্জ জেলা, পূর্বে ময়মনসিংহ জেলা ও গাজীপুর জেলা, পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ জেলা রয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলার ইতিহাস প্রণেতা খন্দকার আব্দুর রহিম সাহেবের মতে, ইংরেজ শাসনামলে এদেশের লোকেরা উচু শব্দের পরিবর্তে ‘টান’ শব্দটি ব্যবহার করত। টাঙ্গাইল অঞ্চলে এখনো ‘টান’ শব্দটির প্রচলন রয়েছে। এই টানের সাথে ‘আইল’ শব্দটি যুক্ত করে হয়েছিল ‘টানআইল’। আর পরবর্তীতে এই টানআইলটি রূপান্তরিত হয়ে টাঙ্গাইল নাম হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলার নামকরণ নিয়ে রয়েছে বহু জনশ্রুতি ও নানান ধরণের মতবাদ। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত রেনেল তার মানচিত্রে এই পুরো এলাকাটিকে আটিয়া বলে দেখিয়েছিলেন। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের আগে টাঙ্গাইল নামে কোনো স্বতন্ত্র জায়গার নাম শোনা যায়নি। ১৫ নভেম্বর ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে যখন মহকুমা সদর দপ্তর আটিয়া থেকে স্থানান্তর করা হয় সে সময় টাঙ্গাইল নামটি পরিচিতি লাভ করে।
তারপরও টাঙ্গাইল নামকরণ নিয়ে বিভিন্নজন নানান সময়ে নানা ধরণের মত প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করেন, এই অঞ্চল জম-জমাট হয়ে উঠে যখন বৃটিশ শাসনামলে মোগল প্রশাসন কেন্দ্র আটিয়াকে আশ্রয় করে। সে সময়ের মানুষ ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করত বাহন হিসেবে, যাকে টাঙ্গাইলের মানুষেরা ‘টাঙ্গা’ নাম দিয়েছিলো। বর্তমান সময়েও এ অঞ্চলে টাঙ্গা গাড়ির চলাচল লক্ষ্য করা যায়।
টাঙ্গাইলে দর্শনীয় জায়গা রয়েছে অনেক। তার মধ্যে শাহ্ আদম কাশ্মিরির মাজার, আতিয়া মসজিদ, পরীর দালান, খামার পাড়া মসজিদ ও মাজার উল্লেখযোগ্য। আরো রয়েছে ঝরোকা, সাগরদিঘি, মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, পাকুটিয়া আশ্রম, ধলাপাড়া চৌধুরীবাড়ী, ভারতেশ্বরী হোমস্, ধলাপাড়া মসজিদ, মহেড়া জমিদার বাড়ী, পাকুল্লা মসজিদ, গুপ্তবৃন্দাবন, পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী, ধনবাড়ী নবাব প্যালেস, নাগরপুর জমিদার বাড়ি, গয়হাটার মট, পুন্ডরীকাক্ষ হাসপাতাল, উপেন্দ্র সরোব, তেবাড়িয়া জামে মসজিদ ইত্যাদি জায়গাগুলো কিন্তু দেখার মত।
এছাড়া ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু, এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট। এ তালিকায় আরো রয়েছে ভূঞাপুরের নীলকুঠি, মধুপুর জাতীয় উদ্যান, পীরগাছা রাবার বাগান, শিয়ালকোল বন্দর ইত্যাদি।
বাঙালী রমণীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে শাড়ি, আর সেটা টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি হলেতো কথাই নেই। আকর্ষণীয় তাঁতের শাড়ির জন্য টাঙ্গাইল জেলার খ্যাতি দেশে বিদেশে ছড়িয়ে গেছে। বেনারসি, জামদানি, কটন, হাফসিল্ক এখানকার উল্লেখযোগ্য শাড়ি।
একসময় টাঙ্গাইলের সমৃদ্ধশালী ব্যবসা ছিলো কাঁসা-পিতল এর ব্যবসা। সেসময় বহু মানুষ কাঁসা-পিতলের হরেক রকমের তৈজসপত্র বানানোর কাজে জড়িত ছিলো। সারা দেশ জুড়ে এই কাঁসা পিতলের কদর ছিল, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায়।
টাঙ্গাইল জেলায় রয়েছে নানান ঐতিহ্যবাহী খাবারের সম্ভার। বিশেষ করে নানান রকম মিষ্টি। এখানকার পোড়াবাড়ির চমচম তো বিশ্ব বিখ্যাত। চমচম ছাড়াও রয়েছে দানাদার, খাজা, আমৃত্তি, দই, জিলাপী, সন্দেশ, খির, টানা, রসগোল্লা, কদমা বাতাসা ইত্যাদি।
টাঙ্গাইল জেলা শহরে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল রয়েছে। শহর ও শহরের আশেপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আধুনিক রিসোর্ট। এখানকার এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট দুটি খুবই পরিচিত। এই জেলার নামকরা জমিদার বাড়ি গুলোর মধ্যে কয়েকটিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধা যুক্ত করে পর্যটকদের থাকার উপযোগি করা হয়েছে। যেমন মহেড়া জমিদার বাড়ী, ধনবাড়ি নবাব প্যালেস।
সারাদেশ থেকেই খুব সহজে টাঙ্গাইল জেলায় যাতায়াত করা যায়। ঢাকা থেকে নিয়মিত বাস ও ট্রেন চলাচল করে।
Listing Features
Tags
Items Reviewed - 1
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.
Ali Faisal Dip
একটা জেলায় কতগুলো জমিদার বাড়ি থাকতে পারে? কয়টা আছে গোনার জন্য হলেও টাঙ্গাইল যেতে হবে।
January 25, 2019 5:45 pm