আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা। কিছুদিন আগেও এই জেলার নাম ছিল ‘নবাবগঞ্জ’। তবে ২০০১ সালে স্থানীয় জনগণের দাবির মুখে এ জেলার নাম পাল্টে রাখা হয় ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ’।
১৯৮৪ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হিসেবে প্রকাশ পায়। তার আগে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের মালদহ জেলার একটি অংশ ছিল। তবে ভারত-পাকিস্থান বিভাজনের সময় এটি পূর্ব পাকিস্তানের অংশে চলে আসে।
যদিও চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামটি খুব একটা পুরনো নয় তারপরও এই ‘চাঁপাই’ নামকরণের পেছনে কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ ব্যাপারে দুই ধরণের মতবাদ পাওয়া যায়। একটি বর্তমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে মহেশপুর নামে একটি গ্রাম আছে। বহুপূর্বে এই গ্রামে চম্পাবতী আবার অনেকে বলেন ‘চম্পারাণী’ বা ‘চম্পাবাঈ’ নামে একজন সুন্দরী বাঈজি থাকতেন। এই চম্পারানির নাচের খ্যাতি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং নবাবদের চোখে পরে যান। পরে তিনি নবাবদের পছন্দের পাত্রী হয়ে ওঠেন। তারই নাম অনুযায়ী এই জায়গার নামকরণ হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।
দ্বিতীয় মতবাদটি হল, এই এলাকাটি এক সময় রাজা লখিন্দরের বাসভূমি ছিল। রাজা লখিন্দরের রাজধানীর নাম ছিল চম্পক। সেই চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই নামের উৎপত্তি। তবে প্রকৃত চম্পক নগরীর অবস্থান নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে।
প্রাচীন জনপদ ‘গৌড়ের’ রাজধানী হওয়ার কারণে এই অঞ্চলে বেশ কিছু প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে। এসকল ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থাপনাগুলো বেশিরভাগ হিন্দু শাসনামলের ও সুলতানি আমলে নির্মিত। তবে ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় জমিদারদের রেখে যাওয়া কিছু স্থাপনাও রয়েছে। এসব স্থাপনার মধ্যে তরতীপুর, ছোট সোনা মসজিদ, কানসাটের জমিদার বাড়ী, ছোট সোনামসজিদের প্রস্তর লিপি, খঞ্জন দীঘি, কোতোয়ালীদরওয়াজা, তাহখানা কমপ্লেক্স, ধনাইচকের মসজিদ, দারস বাড়ী মাদ্রাসা মসজিদের প্রস্তর লিপি স্থাপনাগুলো উল্লেখযোগ্য।
চাঁপাই এর আম আমাদের দেশে খুবই বিখ্যাত। এখানে বেশ কয়েক জাতের আম উৎপাদন হয়ে থাকে। তার মধ্যে ক্ষীরশাপাত, বোম্বাই, ফজলি, আশ্বিনা, ল্যাংড়া অন্যতম। আম ছাড়াও এখাকার কাঁসা-পিতল শিল্প জন্য এই জেলাকে আলাদা করে চেনে সবাই। এছাড়া এখানকার নকশী কাজেরও বেশ কদর রয়েছে।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.