বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা থানার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন মসজিদ কুসুম্বা মসজিদ। কুসুম্বা দীঘির পশ্চিম পাড়ে অবস্থান এই ধুসর বর্ণের পাথরের তৈরি মসজিদটির। রাজশাহী শহর থেকে নওগাঁ যাওয়ার সময় পথের পাশেই এই ছোট মসজিদটি চোখে পড়ে।
কুসুম্বা মসজিদটি ছোট হলেও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রচুর। বরেন্দ্র জনপদ নওগাঁ জেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক এই মসজিদ সুলতানী আমলের একটি দারুন নিদর্শন। আমাদের দেশে প্রচলিত পাঁচ টাকার নোটেও অঙ্কিত রয়েছে এই চারশো বছরের পুরনো কুসুম্বা মসজিদ।
কুসুম্বা মসজিদটির নির্মাণকাল (১৫৫৪-১৫৬০ খ্রিষ্টাব্দ) এবং মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন আফগানী শাসনামলের শেষদিকের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলের সুলায়মান নামে একজন, যা মসজিদের প্রবেশদ্বারে বসানো ফলক থেকে জানা যায়।
মসজিদের গায়ে লতাপাতার নকশা করা রয়েছে। প্রাচীরে ঘেরা এই মসজিদটির প্রধান ফটকে প্রহরী চৌকি ছিল। কুসুম্বা মসজিদটির দৈর্ঘ্যে ৫৮ ফুট ও প্রস্থে ৪২ ফুট। দুই সারিতে রয়েছে ৬টি গোলাকার গম্বুজ। মসজিদটি ইটের গাঁথুনি দেয়া এবং সামান্য বাঁকানো কার্ণিশ তার সাথে আটকোণা বুরুজ। এসব দেখে মসজিদ তৈরিতে বাংলা স্থাপত্যরীতির প্রভাব পাওয়া যায়।
মসজিদটির মূল গাঁথুনি ইট দিয়ে তৈরি হলেও এর পুরো দেয়াল আর ভেতরের খিলানগুলো পাথরের আস্তরণ দেয়া। তাছাড়া মসজিদের স্তম্ভ, মেঝে, ভিত্তি মঞ্চ ও দেয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের তৈরি। কুসুম্বা মসজিদটি আয়তাকার এবং এতে রয়েছে তিনটি বে এবং দুটি আইল। এর পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি করে প্রবেশপথ।
মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি পশ্চিম দেয়ালের থেকে ভিন্ন। পশ্চিম দেয়ালের মাঝামাঝি প্রবেশপথ বরাবর দুটো মিহরাব রয়েছে। মসজিদে মোট মিহরাব রয়েছে ৩টি আর সবগুলোই কালো পাথরের তৈরি। মিহরাবে আঙ্গুরগুচ্ছ ও লতাপাতার নকশা খোদাই করা।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে নওগাঁ নিয়মিত বাস চলাচল করে। যে কোনো বাসে যেতে পারেন। আর নওগাঁ শহর থেকে কুসুম্বা মসজিদ পর্যন্ত বাসযোগে যেতে সময় লাগবে ৪০ মিনিট এর মতো।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.