আমরা বাঙালীরা একটু ভোজন রসিক। তাইতো এ দেশের মানুষের খাবারের রেসিপিতে যোগ হয়েছে সব সমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবার স্বাদেও খুব চমৎকার। তেমনই একটি খাবার কালাই-কুমড়ার বড়ি । এটি অনেকেরই খুব প্রিয় একটা খাবার। আলু বেগুনের সাথে বড়ি, মাছের ঝোলে বড়ি অথবা আলু ছুটি/সজনা দিয়ে বড়ির তরকারি, বড়ি ভর্তা; আরো অনেকভাবে রান্না করে খাওয়া হয় এই কালাই-চাল কুমড়ার বড়ি। বিশেষ করে শীতকালের রসনা বিলাসের অন্যতম সুস্বাদু খাবার এটি।
বড়ি দেয়ার উপযুক্ত সময় পৌষ-মাঘ মাস। তবে ফাল্গুন মাসেও বড়ি দেয়া যায়। সে ক্ষেত্রে বড়ি শুকানোর সময় সূর্যের তাপ অনেক বেশি হলে বড়ি ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার বেশি শীতের সময় খেয়াল রাখতে হবে, বড়ি দেয়ার পর প্রথম তিনদিন যেন ভালোভাবে রোদ পায়। তা না হলে সেই বড়ি কিছুটা গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বড়ি বানানোর পদ্ধতি খুব সহজ হলেও এতে পরিশ্রম হয় অনেক বেশি। বড়ি বানানোর জন্য দরকার চালকুমড়া। চালকুমড়া প্রথমে জালি অবস্থায় থাকে, এরপর সঠিকভাবে এটাকে সংরক্ষণ করে বড় করা হয়। এর সাথে প্রয়োজন মাসকালাইয়ের ডাল। এই ডাল উত্তরবঙ্গে খাওয়ার ব্যাপক প্রচোলন আছে। এই ডালের আটা দিয়ে বিখ্যাত কালাই রুটিও বানানো হয়।
ডালকে ভালোভাবে শুকিয়ে ঢেঁকিতে বা মেশিনে পিষে আটা বানানো হয়। চালকুমড়াকে কুড়ে সেটা থেকে বিচিগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে কালাইয়ের আটা মিশিয়ে তাতে খুবই সামান্য পরিমাণে লবণ দিয়ে ভালোভাবে মাখাতে হয়। এই মাখানোটাই খুব কষ্টসাধ্য একটা কাজ। অনেকক্ষণ ধরে চলে এই মাখানোর কাজ। মাখাতে মাখাতে বড়ির আটা খুব নরম করে ফেলা হয়। এই বড়ির আটা মাখানো এবং রৌদ্র ঠিকভাবে না পাওয়া গেলে ভালো মানের বড়ি হয় না।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.