Promo Video
হিমালয়ের তুষারশুভ্র পাহাড় কাঞ্চনজঙ্ঘা। এর সৌন্দর্য্য আর টান এতোটাই প্রবল, যে কেউ এর প্রেমে পড়ে যেতে বাধ্য। সূর্যের সব রঙ-ই যেন নিজের মধ্যে ধারণ করে রেখেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাই সূর্যের আলো বাড়ার সাথে সাথে পাল্টাতে থাকে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। ভোরের প্রথম আলোয় টুকটুকে লাল, এরপর হঠাৎ সেই লাল পাল্টে হয়ে যায় কমলা রঙ, তারপর হলুদ, আর সবশেষে সাদা।
কাঞ্চনজঙ্ঘার এই মোহনীয় রূপ দেখতেই প্রতি বছর অনেকেই দার্জিলিং ছুটে যান। আর যারা দার্জিলিং যেতে পারছেন না তারা ফেসবুক, ইউটিউব আর গুগলে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি দেখছেন আর সেখানে না যেতে পারার জন্য মনে মনে দুঃখ পাচ্ছেন। তবে যারা পাহাড়ের এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে না পারার আফসোস করছেন তাদের জন্য আছে সুখবর। আর তা হলো বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকেই এখন কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা পাওয়া যায়।
কাঞ্চনজঙ্ঘা, হিমালয় পর্বতমালার পর্বতশৃঙ্গ। মাউন্ট এভারেস্ট ও কে২ এর পরে এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ; যার উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার (২৮,১৬৯ ফুট)। এটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত। হিমালয় পৰ্বতের এই অংশটিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমল বলা হয়।
শীত মৌসুমে মেঘমুক্ত এবং কুয়াশাবিহীন দিনে পঞ্চগড় জেলার উত্তর দিকে তাকালে চোখে পড়ে হিমালয় গিরিমালার নয়নাভিরাম দৃশ্য। আর বাড়তি পাওনা হিসেবে ভারতের কাঞ্চনজঙ্ঘা পাহাড় দেখা যাবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে। এ দৃশ্য দেখার জন্য দূরবীণ বা বাইনোকুলার সাথে করে নিয়ে আসতে হবে না। দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকলে খালি চোখে দেখতে পারেন প্রকৃতির এসব অপরূপ দৃশ্য।
গত তিন বছর ধরে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখেই দেখা মিলছে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘার। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ঋতুবৈচিত্র্যের শীতের মেঘমুক্ত নীলাকাশে ভেসে ওঠে তুষারশুভ্র হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা।
পাহাড়ের বরফশুভ্র গায়ে সূর্যের আলো পড়লে চকচকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘার একাধিক রূপ দেখা যায়। মোহনীয় এ দৃশ্য দেখতেই দেশ-বিদেশের পর্যটকরা শীতের সময় তেঁতুলিয়ায় ভিড় করেন। একা, বন্ধুদের নিয়ে দল বেঁধে আথবা পরিবার-পরিজন নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দর্শন করা যায়।
এছাড়া তেঁতুলিয়ার পুরোনো ডাকবাংলোর পাশ ঘেঁষে প্রবাহিত মহানন্দার পাড়ে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের বর্ণিল আলোকচ্ছ্বটায় উদ্ভাসিত অভূতপূর্ব দৃশ্যে অন্যরকম ভালোলাগার দ্যুতিতে মন ভরে যায়। আর দিনের আলো শেষে সীমান্তের কাঁটাতার-ঘেঁষা ভারতের সার্চলাইটের আলো, শিলিগুড়ি শহরের নিয়নবাতি, মহানন্দা নদীর পানির কুল কুল শব্দ পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে। বিশেষ করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন সুবিধা চালু হওয়ায় প্রতিদিনই তেঁতুলিয়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসু প্রকৃতিপেমীদের ভিড় বাড়ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় পর্যটকদের অপূর্ণতা নিয়েই ফিরে আসতে হচ্ছে।
আবাসন সুবিধা না থাকায় রাতযাপনের জন্য বাংলাবান্ধা-তেঁতুলিয়া থেকে ফিরে যেতে হয় ৬০ কিলোমিটার দূরে পঞ্চগড় শহরে। ইদানিং অল্প কিছু স্থানিয় রেস্টুরেন্ট আর থাকার হোটেল গড়ে উঠেছে।
যেভাবে যাবেন:
সড়ক পথ:
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় কিংবা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় বেশ কিছু বাস সরাসরি যাতায়াত করে। হানিফ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল পরিবহন, এনা পরিবহন ও শ্যামলীর এসি/নন-এসি বাসে তেঁতুলিয়ায় যাওয়া যায়।
রেল পথ:
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে পঞ্চগড় যাওয়া যায়।
আকাশ পথ:
যাদের বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, কিংবা সড়ক বা রেল পথের দীর্ঘ জার্নি এড়াতে চান তারা ঢাকা থেকে আকাশপথে সৈয়দপুর পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কারে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা যেতে পারেন। বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটার।
Tags
Gallery - Photos
Items Reviewed - 1
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.
Ali Faisal Dip
বাংলাদেশের দার্জিলিং
November 13, 2018 2:45 pm