ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ি বা মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম - Hosted By shafi_saykat
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ি বর্তমানে মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম। এটি বগুড়া জেলার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। বগুড়া শহরের সাতমাথা মোড়ের নিকটে ও করতোয়া নদীর পশ্চিম তীর ঘেঁষে নবাব প্যালেসের ভেতরেই অবস্থিত এই মিউজিয়াম অ্যান্ড পার্ক। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০১৬ সালের মে মাসে এটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে।
জানা যায়, নবাব আলতাফ আলী চৌধুরীর অবর্তমানে তার ছেলে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী নবাববাড়ীর একমাত্র উত্তরাধিকার ছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। পরবর্তীতে তার তিন ছেলে- সৈয়দ হাম্মদ আলী, সৈয়দ হামদে আলী ও সৈয়দ মাহমুদ আলী এবং মেয়ে মাহমুদা আলী পিতার উত্তরাধিকার সূত্রে নবাব বাড়ির মালিক হন। বর্তমানে এই মিউজিয়াম দেখাশোনা করেন মোহাম্মাদ আলীর ছেলে সৈয়দ হামদে আলী চৌধুরী।
নওয়াব বাড়ীর অনেকগুলো ভবন বগুড়া শহরে আছে। তারমধ্যে দ্বিতল যে ভবনটিতে নওয়াব পরিবার থাকতেন, সেটিই বর্তমানে নওয়াব বাড়ি বলে পরিচিত। মূল এই ভবনটির আশেপাশে একতালা ভবন সহ ছোট বড় মিলিয়ে মোট তিনটি ভবন রয়েছে। দোতলা ভবনে ৮টি কক্ষ ও ৯টি দরজা রয়েছে। ভবনটির নিচ তলায় রয়েছে ১৬টি কক্ষ ও ১৩ টি দরজা আছে। কারুভবনের ৪টি কক্ষে রয়েছে ১১টি দরজা।
এছাড়া অধ:স্তন কর্মচারীর জন্য রয়েছে ৮টি কক্ষ। নওয়াব বাড়ীর দরজা তিনটি। প্রথম গেটটি খোলা থাকে, দ্বিতীয়টি লোহার তৈরী এবং তৃতীয়টি কাঠের তৈরী। প্রধান গেটের উপর একটি ঘন্টা ঝুলানো রয়েছে সাথে একটি সার্চ লাইটও আছে। গেটের দেওয়ালে বিভিন্ন রকমের কারুকাজ করা। বিশাল উঠোনে সব মিলিয়ে গাছ আছে ৭১টি। এসব গাছ বাসভবনের ছায়াদান করার সাথে সাথে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও করে যাচ্ছে।
১৯৯৮ সালের মে মাসে বগুড়ার নবাব মোহাম্মাদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। নবাব প্যালেসে প্রবেশ করলে দেখা যাবে পুরনো প্যালেসটি বিশাল এক জাদুঘর। চোখে পড়বে সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা বাঘ, কুমির, সিংহ, নেপালি দারোয়ান, বেয়ারা, মালী, পালকি, কোচওয়ান, টমটম, ময়ূর, রাজহাঁসসহ বিভিন্ন পাখির প্রতিমূর্তি।
নবাববাড়ির বিরাট হলরুমের দেয়ালে রয়েছে যথাক্রমে নবাব আবদুস সোবাহান চৌধুরী, নবাবজাদা আলতাফ আলী চৌধুরী, তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী, সৈয়দ তহুরুন নেছা চৌধুরানী, সৈয়দ আলতাফুন নেছা চৌধুরানীর প্রতিকৃতি। সৈয়দ ওমর আলী চৌধুরীর উদ্যোগে নবাব আমলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শিল্পী আমিনুল ইসলাম দুলাল অনেক জীবন্ত ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন তার সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে।তার মধ্যে রয়েছে জলসা ঘরে জলসার দৃশ্য, অতিথি আপ্যায়ন, পড়ার ঘরে বই সাজানো, বিলিয়ার্ড খেলা, নায়েবের খাজনা আদায় সহ অনেক দৃশ্য।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম। এখানে ঢোকার প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। এটি শুধুই প্রবেশ মূল্য। ভেতরে ট্রেন, দোলনা, বিমানে চড়া এবং নবাববাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে আলাদা টিকিট প্রয়োজন হয়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.