ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহবাহী খাবার পুঁইশাক দিয়ে বাঁশপাতা চ্যাঁপা শুঁটকি - Hosted By sumaya linda
বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ হলেও এখানকার খাবারে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। প্রায় প্রতিটি জেলাতেই রয়েছে ঐতিহবাহী ও জনপ্রিয় অনেক খাবার। রান্না পদ্ধতি, রীতি-নীতি, খাবার পরিবেশন, খাদ্যের নামকরণ, স্বাদসহ অনেক বিষয়েই রয়েছে ভিন্নতা।
আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি ঐতিহবাহী খাবার সম্পর্কে জানবো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ১৯৮৪ সালে। এর আগে এটি কুমিল্লা জেলার একটি মহকুমা ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই জেলার সাথে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো। এখানে রয়েছে দুটি হাইওয়ে রাস্তা। রয়েছে রেল ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এ জেলার বিখ্যাত মিষ্টান্নের মধ্যে ছানামুখী অন্যতম। দেশের অন্য কোনো অঞ্চলে এই মিষ্টান্নের নাম তেমন একটা শোনা যায় না। এছাড়া তালের রস দিয়ে তৈরি আরেকটি মিষ্টান্ন তালের বড়া ও রসমালাই বিখ্যাত। শুধু মিষ্টান্নই নয়, এই জেলার ঐতিহ্যবাহী ঝাল খাবারও রয়েছে। তেমনই একটি খাবার পুঁইশাক দিয়ে বাঁশপাতা চ্যাঁপা শুঁটকি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভ্রমণে গেলে এটি অবশ্যই খেয়ে দেখবেন। আর যারা শুঁটকি খেতে পছন্দ করেন এই রেসিপি তাদের খুবই ভালো লাগবে।
বাংলাদেশে অনেক এলাকায় শুঁটকি মাছ খাওয়ার প্রবণতা প্রাচীনকাল থেকে। রুপচাঁদা বা লইট্টা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, গজার, কাঁচকি, বাঁশপাতা, পুঁটি ইত্যাদি মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন জেলায় এই শুটকি রান্নার পদ্ধতিও বিভিন্ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই ঐতিহ্যবাহী রান্নার পুরো পক্রিয়াটি একবার দেখে নিতে পারেন:
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
পুঁই শাক- ১ মুঠো (২০টি বড় আকারের পাতা), বাঁশপাতা চ্যাপা শুঁটকি- ১২টি, রসুন বাটা- ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া- আধা চা চামচ, তেল- ১/৩ কাপ, মরিচ গুঁড়া- স্বাদ মতো, পেঁয়াজ বাটা- ১ টেবিল চামচ, রসুন কুচি- ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি- দেড় কাপ, কাঁচামরিচ- কয়েকটি, লবণ- স্বাদ মতো।
রন্ধণ প্রণালি:
কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন। পেঁয়াজ নরম হয়ে গেলে রসুন বাটা দিয়ে দিন। রসুন বাটার কাঁচা গন্ধ চলে গেলে সামান্য পানি দিয়ে একে একে মরিচের গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কষিয়ে নিন মসলা। পানি শুকিয়ে গেলে আবার আধা কাপ পানি দিয়ে শুঁটকি দিয়ে দিন। শুঁটকি আগেই সেদ্ধ করে কাঁটা সরিয়ে নিতে পারেন; আবার রান্না করার সময়ও কাজটি করা যায়। দুই মিনিটের মধ্যেই শুঁটকি নরম হয়ে কাঁটা আলাদা হয়ে আসবে।
কাঁটা সরিয়ে পুঁই শাক কুচি দিয়ে কড়াই ঢাকনি দিয়ে ঢেকে দিন ৫ মিনিটের জন্য। চুলার জ্বাল মিডিয়ামের থেকেও সামান্য কম থাকবে। পানি উঠে গেলে ঢাকনা সরিয়ে ভালো করে নেড়ে দিন। লবণ, পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে আবারো ঢেকে দিন হাঁড়ি। এবার ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন, তারমধ্যে কয়েকবার নেড়ে দিতে হবে। সব উপকরণ সেদ্ধ হয়ে গেলে কয়েকটি আস্ত কাঁচামরিচ দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে ফেলুন।
চাইলে রেসিপিটি দেখে বাড়িতে তৈরি করে খেতে পারেন। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঘুরতে গেলে স্থানীয় কোনো হোটেলে এই খাবারটির স্বাদ নিতে পারেন।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.