Promo Video
ঢাকার খুব কাছে টাঙ্গাইলের কয়েকটি ট্যুর স্পট সারাদেশে মানুষের কাছে অতিপরিচিত ও বিখ্যাত। বিশেষ করে টাঙ্গাইলে রয়েছে নান্দনিক নির্মানশৈলী সম্বৃদ্ধ অনেকগুলা জমিদার বাড়ি এবং বিভিন্ন সময়ে নির্মিত বেশকিছু প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন।
টাঙ্গাইল শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে দেলদুয়ার উপজেলায় অবস্থিত আতিয়া জামে মসজিদ। টাঙ্গাইল শহর থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় আতিয়া মসজিদ যাওয়া যায় খুব সহজেই। সারা বছর প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এখানে। ইতিহাসে পরিচিত ও ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে অতিপরিচিত এই মসজিদটি। বাংলাদেশের টাকায় রয়েছে এই মসজিদটির ছবি।
মসজিদের ‘আতিয়া’ শব্দটি আরবি শব্দ। এর উৎপত্তি হয়েছে ‘আতা’ থেকে; যার বাংলা অর্থ হলো ‘দান’। পঞ্চদশ শতকে এ অঞ্চলে আদম শাহ্ বাবা কাশ্মিরি নামে বিখ্যাত এক সুফি ধর্মপ্রচারক আসেন। তখনকার বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ তাকে আতিয়ার জায়গিরদার করেন। ওই সময় কররানী শাসক সোলাইমান কররানীর কাছ থেকে তার ধর্মীয় কার্য পরিচালনার ব্যয়ভার বহনের জন্য বিশাল একটি এলাকা ওয়াকফ্ হিসেবে পান। সেই থেকে এই পরগণার নাম হয় আতিয়া। শাহ্ বাবা কাশ্মিরির পরামর্শে প্রিয় ভক্ত সাঈদ খান পন্নীকে মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গীর আতিয়া পরগণার শাসন কর্তা নিয়োগ করেন। সাঈদ খান পন্নী ১৬০৮ সালে আতিয়া মসজিদ নির্মাণ করেন।
সুলতানি ও মুঘল আমলের স্থাপত্য শিল্পরীতির সমন্বয়ে নির্মিত এ মসজিদের পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজে নিযুক্ত ছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মুহাম্মদ খাঁ। আতিয়া মসজিদটির চারকোণে ৪টি বিরাট অষ্টকোণাকৃতির মিনার রয়েছে। মিনারগুলো ছাদের অনেক উপরে উঠে ছোট গম্বুজে শেষ হয়েছে। বাংলার স্থাপত্যসমূহ মূলত ইটের তৈরি। তাই বাংলার স্থাপত্য এবং তার অলংকরণ সবই বিকশিত হয়েছে ইটের মাধ্যমেই। আতিয়া মসজিদটিতে নান্দনিক পোড়ামাটির টেরাকোটার নকশা যেকোনো ভ্রমণপ্রিয় মানুষকে মুগ্ধ করবে।
এর দেয়ালে রয়েছে বহু বৈচিত্রময় নির্মাণ শৈলী। বিদায়ী সুলতানি আর নবাগত মুঘল উভয় রীতির সংমিশ্রণে অপূর্ব এক মুসলিম স্থাপত্য এই আতিয়া জামে মসজিদ। টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্রাপ্ত মূল শিলালিপিগুলোর মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদে প্রাপ্ত একটি আরবি এবং একটি ফারসি শিলালিপি রয়েছে। যা দৃষ্টিনন্দন ও এ অঞ্চলে বিরল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা ধর্মের মানুষ আসে চমৎকার এই মসজিদটি দেখতে।
প্রকৃতির অনিন্দ্য সৌন্দর্য্য ও নিরিবিলি পরিবেশে একটু মানসিক শান্তি খুঁজতে আপনিও চলে যেতে পারেন ঢাকার খুব কাছের জেলা টাঙ্গাইলে। ঢাকা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জেলায় রয়েছে গ্রাম্য প্রাকৃতিক পরিবেশ। একটু গ্রাম্য পরিবেশের সাথে ইতিহাস ঐতিহ্যের উপস্থিতি আনন্দদায়ক হবে নিশ্চয়।
Add Reviews & Rate
You must be logged in to post a comment.